খাণ্ডবদাহন – খাণ্ডব মূলত মহাভারতের একটি বিখ্যাত অরণ্য, যা আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। নির্বিচারে ধ্বংস করা হয়েছিল অরণ্যের প্রায় সকল প্রাণিকে । এ কবিতায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনির হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসযজ্ঞকে খাণ্ডবদাহন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সিঁথির সিঁদুর মুছে গেল হরিদাসীর – মুক্তিযুদ্ধের শহিদ হয়েছেন হরিদাসীর স্বামী। এ কারণে বিধবা হরিদাসীর সিঁথি থেকে সিঁদুর - মুছে ফেলতে হয়েছে । সনাতন ধর্মের বিবাহকেন্দ্রিক সংস্কৃতিতে সধবারা সিঁদুর পরেন, স্বামীর মৃত্যু হলে সিঁদুর মুছে ফেলতে হয়। হরিদাসীকেও হতে হয়েছে সিঁদুরবিহীন। যত্রতত্র – যেখানে সেখানে, সব জায়গায়, তুমি আসবে বলে...ছাত্রাবাস, বস্তি উজাড় হলো – নয় মাসব্যাপী সংঘটিত মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদান বাহিনি নির্বিচারে গণহত্যা চালিয়েছে। ধ্বংস করেছে ছাত্রাবাস, বস্তি। কারণ ছাত্রজনতার প্রবল প্রতিবাদ আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল ছাত্রাবাস ও বস্তি । হানাদার বাহিনি ও তাদের দোসররা চেয়েছিল প্রতিরোধের সংগ্রামকে স্তব্ধ করে দিতে। তাই তারা পুড়িয়ে দিয়েছিল গ্রাম ও শহর। নারকীয় এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছিল বাঙালি জাতিকে । প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে অপরিসীম আত্মত্যাগের মাধ্যমে। থুথুড়ে এক বুড়ো - বয়সের ভারে বিধ্বস্ত লোক, যার বয়স অনেক হয়েছে এবং চলাচল করতে যার কষ্ট হয়; রুস্তম শেখ এখন পোকার দখলে – রুস্তম শেখ নামের এক রিকশাওয়ালা, যিনি যুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। মৃত অবস্থা বোঝানোর জন্য বলা হয়েছে ‘যার ফুসফুস এখন পোকার দখলে'।
Read more